প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিকে গণতন্ত্রের স্বার্থে জনমতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে সংসদে যোগদানের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন, কাজেই বিএনপি’র দুর্নীতির মামলা তার নিজস্ব গতিতেই চলবে।
তিনি বলেন, ‘যে কয়টা সিটে তারা (বিএনপি) জিতেছে। তারা যদি চায় তাহলে তাদের সংসদে আসা প্রয়োজন।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের কৃতকর্মের জন্য, দুর্নীতির জন্য যেসব মামলা হয়েছে সেসব মামলা তার আপন গতিতে চলবে। কেননা বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন।’ শেখ হাসিনা আজ বিকেলে রাজধানী বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের উপদেষ্টা পরিষদ এবং কার্যনির্বাহী সংসদের যৌথ সভার প্রারম্ভিক ভাষণে এ কথা বলেন।
নিজেদের দোষেই এবারের বিএনপি’র ভরাডুবি হয়েছে, এমন ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে হেরেছে এই দোষ তারা কাকে দিবে। দোষ দিলে নিজেদেরকেই দিতে হয়। কারণ, একটি রাজনৈতিক দলের যদি নেতৃত্ব না থাকে, মাথাই না থাকে তাহলে সেই রাজনৈদিক দল কিভাবে নির্বাচনে জেতার কথা চিন্তা করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি দলে পলাতক আসামী দিয়ে রাজনীতি করতে গেলে কি রেজাল্ট হতে পারে সেটাই তারা পেয়েছে। তবে, তাও এতটা হত না তারা যদি নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে মনোনয়ন বাণিজ্যটা না করতো। তাহলে হয়তো আরো ভাল রেজাল্ট করতে পারতো।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশটাতো ছোট সকলের খবরই জানা যায়- যেসব নেতারা হয়তো নির্বাচনে জয়ী হবার মত নেতা, তাদের বাদ দিয়ে মোটা অংকের টাকা যারা দিতে পেরেছে তাকে মনোনয়ন দিয়েছে। একই আসনে ৩ থেকে ৫ জন নেতা আবার সেই মনোনয়ন দেওয়া নিয়ে তাদের অফিসে যে মারামারি, ভাংচুর, জামা ছেঁড়াছেড়ি-তার থেকেতো মানুষ জানতেই পেরেছে যে, এদের চরিত্রটা কি।’ ‘কাজেই এদের চরিত্র শোধরায়নি, বাংলাদেশের জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করে দিয়েছে, যোগ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের মাঝে আজকে এই উপলব্ধি এসে গেছে যে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকলে তারা ভাল থাকে, তাদের জীবন-মান উন্নত হয়। দারিদ্র্যের কষাঘাতে তাদের জর্জরিত হতে হয় না। তারা শান্তিতে থাকতে পারে। তাদের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটানা ১০ বছর হাতে সময় পেয়েছিল বলেই বাংলাদেশ আজকে সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকে ঘিরে জনগণের ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার উল্লেখ করে বলেন, এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে লক্ষ্যণীয় ছিল নারী, তরুণ এবং প্রথম ভোটার হওয়া ভোটার সহ সর্বস্তরের ভোটারদের মাঝে স্বতঃস্ফূর্ততা। আর ভোট দানের প্রতি তাদের আগ্রহ ও লক্ষ্যণীয় ছিল।
তিনি বলেন, ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, মেহনতী মানুষ থেকে ব্যবসায়ী সবার মনে একটা আকাঙ্খা ছিল- আওয়ামী লীগ আসলে তাঁরা ভাল থাকবে, দেশটা ভাল চলবে, দেশটা উন্নত হবে।
এবারের নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা গুটিকতক স্থানে বিএনপি-জামাতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির অভিযোগ এনে বলেন, ‘কোথাও তারা ব্যালট বাক্স ছিনতাই করতে গেছে, কোথাও তারা নির্বাচনটাকে বানচাল করার চেষ্টা করেছে এবং তাদের অপকর্মের জন্য বেশ কিছু প্রাণহানি ঘটেছে। যার মধ্যে আমাদের দলের নেতা-কর্মীরাও রয়েছে।’