সফররত নেদারল্যান্ডের রানী ম্যাক্সিমা জরিগুয়েতা সেরুতি ডিজিটাল আর্থিক সেবা সহজীকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণের যে বিকাশ ঘটেছে তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। একইসাথে তিনি আর্থিক সেবায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ের প্যাসিফিক লাউঞ্জে দেশের বেসরকারিখাতের প্রতিনিধি বিশেষ করে তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী এবং ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠকশেষে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক এবং ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর এফ হোসেন রানী ম্যাক্সিমাকে উদ্বৃত করে বাসসকে এসব কথা জানান।
রুবানা হক বলেন,পোশাকখাতে এমন ইকো-সিস্টেম ব্যবস্থা দাঁড় করাতে হবে,যাতে শতভাগ শ্রমিককে ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে আসা যায়,এ নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। রানী বলেছেন- প্রয়োজন হলে বিশ্বের যেসব প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল আর্থিক সেবা নিয়ে ভাল কাজ করছে,তাদের সঙ্গে কারিগরি জ্ঞান বিনিময়ের উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে তিনি সহায়তা করার আশ্বাস দেন।
এছাড়া রানী ম্যক্সিমা বাংলাদেশের আর্থিক অন্তর্ভূক্তিকরণ জোরদারে উন্নয়ন সহযোগিদের সাথেও আলোচনা করবেন বলে জানান।
রানী ম্যাক্সিমাকে উদ্ধৃত্ত করে ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিরণে বড় অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। তবে আর্থিক সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এখনও লিঙ্গ বৈষম্য রয়ে গেছে। পুরুষদের তুলনায় নারীরা ডিজিটাল আর্থিক সেবা বা ব্যাংকিং সেবা প্রাপ্তিতে পিছিয়ে আছে। এই বৈষম্য কমাতে আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা আরো কিভাবে ডিজিটালাইজড করা যায়,এ নিয়ে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
রানী বলেন,বাংলাদেশের পোশাক খাতে ৪৫ লাখ শ্রমিক কাজ করছে। এদেরকে কেবলমাত্র অনলাইনে বেতন পরিশোধ করলে চলবে না,শ্রমিকরা যেন তাদের কেনাকাটা বা অন্যান্য লেনদেন অনলাইনে করতে পারে, সেই ধরনের ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে তিনি সহায়তা করবেন বলে জানান।
উল্লেখ্য, রানী ম্যাক্সিমা জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেজের ইনক্লুসিভ ফাইনান্স ফর ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক বিশেষ পরামর্শক। বিশ্বব্যাপী অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা জোরদার, দারিদ্র্য নিরসন, খাদ্য নিরাপত্তা ও শিক্ষার মতো উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডাচ রানী জনসচেনতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।
রানী ম্যাক্সিমা গত ৯ জুলাই তিনদিনের সফরে বাংলাদেশ আসেন।